দীর্ঘ নীরবতা ভেঙে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানালেন— অভিমান থাকলেও দলবদলের কোনও পরিকল্পনা নেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতার প্রতি শ্রদ্ধাও প্রকাশ করলেন প্রকাশ্যে।
নয়াদিল্লি, ১০ জুলাই: অনেকদিন ধরেই রাজ্য রাজনীতিতে কানাঘুষো চলছিল, বিজেপি ছাড়তে পারেন দিলীপ ঘোষ। কিন্তু বুধবার দিল্লিতে শিবপ্রকাশের সঙ্গে বৈঠকের পর নিজেই জানালেন— তিনি কোথাও যাচ্ছেন না, বিজেপিতেই আছেন এবং থাকবেন।
দিলীপ বলেন, “যে পার্টি আমায় দাঁড় করিয়েছে, তাকে কেন ছাড়ব?” এই একটাই বাক্যে যেন তিনি সব জল্পনার অবসান ঘটালেন।
তবে রাজ্য রাজনীতির এই ‘আভিমানী নেতা’র মন এখনও পুরোপুরি হালকা হয়েছে বলা যায় না। তিনি অভিযোগ করেন, পার্টির মিটিংয়ে তাঁকে ডাকা হত না, চেয়ারে বসতে দেওয়া হত না, বড় নেতারা এলে ডাক পেতেন না, এবং কোথাও গেলে স্থানীয় কর্মীদের সাহায্য মিলত না। এমন পরিস্থিতিতে তাঁর দলবদল নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল, বিশেষ করে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করার পর।
দিল্লির সফর তাঁর মনোভাব কিছুটা পাল্টেছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। বিজেপি নেতাদের সঙ্গে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক, বিশেষ করে শিবপ্রকাশের সঙ্গে সাক্ষাৎ— তাঁকে আবার দলের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে পারে।
দিলীপ আরও বলেন,
“আমি তো দল ছাড়িনি। কেউ কেউ আমায় সরাতে চেয়েছিল, চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমি বিজেপির শৃঙ্খলাবদ্ধ সৈনিক।”
তিনি নাম না করে কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্ত মজুমদার-কে। বলেন, তাঁকে মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে দুর্গাপুরে পাঠানো সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল না। এর আগে দলের কেউ কেউ তাঁকে দলছাড়া করতে চেয়েছিলেন বলেও অভিযোগ করেন।
🎯 মমতার প্রশংসা নিয়ে বিতর্ক
দিলীপ ঘোষ সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতার প্রশংসা করেছিলেন, যার ফলে দলত্যাগ এবং তৃণমূল যোগের জল্পনা আরও জোরদার হয়েছিল। সেই বিষয়ে তিনি বলেন,
“আমি সবার প্রশংসা করি। মমতার নামে তো কোনও কেস নেই। যাঁরা তাকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলছে, তাঁদের নামে তো কেস আছে। তাহলে আমি যদি মমতার সঙ্গে বসি, আমি খারাপ হয়ে গেলাম?”
তিনি আরও বলেন, এই মন্তব্যে দলের কর্মীরা নয়, কিছু নেতা অস্বস্তিতে পড়েছেন। কারা সেই নেতা, তা স্পষ্ট না করলেও আঙুল যে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর দিকেই, তা বুঝতে বিশেষজ্ঞ হওয়া লাগে না।

